রাতে ঘুমাবার দো‘আ
আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী’ (আন-নাবা ৯)।
নিদ্রা মানুষের চিন্তা-ভাবনাকে দূর করে তার অন্তর ও মস্তিষ্ককে এমন স্বস্তি ও শান্তি দান করে যার বিকল্প দুনিয়ার কোন শান্তি হ’তে পারে না। নিদ্রা বা ঘুম মানব জাতীর জন্য আল্লাহর বড় নে‘মত। শোয়ার সময় বিছানাটা ঝেড়ে নেওয়ার জন্য নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন’।[বুখারী (ই.ফা) হা/৫৭৬৮।]
বারা ইবনু আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শোয়ার সময় ডান পার্শ্বের উপর শুতেন, অতঃপর বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আসলাম্তু নাফ্সী ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহী ইলাইকা ওয়া ফাউওয়ায্তু আমরী ইলাইকা ওয়ালজা’তু যাহরী ইলাইকা রাগবাতাওঁ ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা মালজাআ ওয়ালা মানজাআ মিনকা ইল্লা ইলাইকা আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনঝালতা ওয়া বি নাবিইয়্যিকাল্লাযী আরসালতা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি নিজেকে তোমাতে সমর্পণ করলাম, তোমার দিকে মুখ ফিরালাম, আমার কাজ তোমার প্রতি ন্যস্ত করলাম এবং তোমার প্রতি ভয় ও আগ্রহ নিয়ে তোমার আশ্রয় গ্রহণ করলাম। তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও নাজাতের স্থান নেই। তোমার নাযিলকৃত কিতাবের প্রতি ঈমান আনলাম এবং তোমার প্রেরিত নবীর প্রতি ঈমান আনলাম’।[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২২৭৪]
ফযীলত : নবী করীম (ছাঃ) এক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন ওযূ করবে তোমার ছালাতের ওযূর ন্যায়। অতঃপর তোমার ডান পার্শ্বের উপরে শুবে এবং উক্ত দো‘আ বলবে। তারপর নবী করীম (ছাঃ) বললেন, যদি তুমি সেই রাতেই মৃত্যু বরণ কর, তবে তুমি ইসলামের উপর মৃত্যু বরণ করবে আর যদি তুমি ভোরে উঠ, তবে তুমি কল্যাণের সাথে উঠবে’।[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২২৭৪]
নবী করীম (ছাঃ) যখন রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন, তখন বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বিসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তোমারই নামে আমি মৃত্যুবরণ করছি এবং তোমারই দয়ায় পুনরায় জীবিত হব’।[বুখারী, মিশকাত হা/২২৭২]
রাতে ঘুমাবার সময় ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করলে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘুম থেকে উঠা পর্যন্ত একজন পাহারাদার নিযুক্ত করা হয়। ফলে শয়তান তার নিকট আসতে পারে না।[বুখারী, মিশকাত হা/২০২১]
নবী করীম (ছাঃ) রাতে ঘুমাবার সময় সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক্ব, সূরা নাস পড়তেন।[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২০২৯]
রাসূল (ছাঃ) শোয়ার সময় গালের নিচে ডান হাত রেখে নিম্নের দো‘আটিও পড়তেন-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ক্বিনী ‘আযা-বাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ‘ইবা-দাকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার আযাব হ’তে রক্ষা কর, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে কবর হ’তে উঠাবে’।[তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২২৮৯]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ দু’টি আয়াত পড়বে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে’।[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২০২৩]
নবী করীম (ছাঃ) শোয়ার সময় ফাতেমা (রাঃ)-কে ৩৩ বার সুব্হা-নাল্লাহ, ৩৩ বার ‘আল্-হাম্দুলিল্লাহ’, ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়তে বলেছিলেন।[মুসলিম, মিশকাত হা/২২৭৭]