Type Here to Get Search Results !

শুধু ভাত-কাপড় দিলেই স্বামী হওয়া যায় না: একজন স্বামীর দায়িত্ব

শুধু ভাত-কাপড় দিলেই স্বামী হওয়া যায় না: একজন স্বামীর দায়িত্ব


বিবাহ শুধুমাত্র একটি সামাজিক বন্ধন নয়, এটি ভালোবাসা, সম্মান এবং পারস্পরিক দায়িত্ববোধের প্রতিচ্ছবি। অনেকেই মনে করেন, স্ত্রীকে খাওয়ানো, পরানো আর একসাথে বসবাস করাই স্বামীর প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু বাস্তবতা হলো, শুধু ভাত-কাপড় দিলেই একজন প্রকৃত স্বামী হওয়া যায় না। স্ত্রী একজন মানুষের জীবনসঙ্গী, তার সুখ-দুঃখের সাথী। তাই স্বামীর দায়িত্বও অনেক, তাকে ভালোবাসা, যত্ন এবং শ্রদ্ধা করা স্বামীর অন্যতম প্রধান কর্তব্য। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারস্পরিক সম্মান অপরিহার্য।

বিয়ে মানে শুধু একসাথে থাকা নয়, একে অপরের মানসিক সাপোর্টও দেওয়া। স্ত্রীর কোনো সমস্যা বা মানসিক চাপ থাকলে স্বামীকে তার পাশে দাঁড়াতে হবে। তার অনুভূতি বুঝতে হবে, তার কথা শুনতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে।

স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই উচিত সংসারে ভূমিকা রাখা। যদি স্ত্রী কাজ না করেন, তবে সংসারের দায়িত্ব স্বামীর কাঁধে বেশি থাকবে। আর স্ত্রী যদি কাজ করেন, তবে সংসারের খরচ ভাগাভাগি করা এবং বাড়ির কাজেও তাকে সাহায্য করা জরুরি।

শুধু উপার্জন করলেই সংসার সুখী হয় না, একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে সময়, মনোযোগ ও সান্নিধ্যও প্রত্যাশা করে। অফিসের ব্যস্ততা বা অন্যান্য কাজের ফাঁকে স্ত্রীকে যথেষ্ট সময় দেওয়া উচিত, যাতে সে অবহেলিত বোধ না করে।

অনেকেই মনে করেন, ঘরের কাজ করা শুধু স্ত্রীর দায়িত্ব। কিন্তু বাস্তবে সংসার দুজনের, তাই ঘরের কাজেও স্বামীর সহায়তা করা উচিত। এতে সংসার সুন্দর হয়, সম্পর্কও মজবুত হয়।

স্ত্রীকে কোনোভাবেই ছোট করা, তার প্রতি অবহেলা দেখানো বা অসম্মান করা একজন স্বামীর জন্য অনুচিত। বরং তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে, তার কাজকে গুরুত্ব দিতে ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।

স্ত্রীর স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার প্রতি স্বামীর যত্নশীল হওয়া উচিত। অসুস্থ হলে তার পাশে থাকা, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া বা তার ভালো থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া স্বামীর অন্যতম দায়িত্ব।

একজন স্ত্রীও একজন মানুষ, তার নিজস্ব চিন্তা, পছন্দ-অপছন্দ এবং স্বপ্ন থাকতে পারে। তাকে সেগুলো পূরণ করতে দেওয়া, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া এবং তার ব্যক্তিত্বের প্রতি সম্মান দেখানো খুবই জরুরি।


শেষ কথা


একটি সুখী দাম্পত্য জীবন কেবলমাত্র দায়িত্ব পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভালোবাসা, বোঝাপড়া ও পারস্পরিক সহমর্মিতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। তাই একজন স্বামীকে শুধু অর্থ উপার্জন বা শারীরিক সম্পর্কেই সীমাবদ্ধ না থেকে, স্ত্রীকে মানসিক ও আবেগিকভাবে ভালো রাখার জন্যও সচেষ্ট থাকতে হবে। তাহলেই দাম্পত্য জীবন হবে সুন্দর, সুখী ও প্রশান্তিময়।